সমস্ত লেখাগুলি

নরকে পাওয়া প্রাণ -
প্রদীপ কুমার বর্মণ
Dec. 3, 2024 | গল্প | views:801 | likes:0 | share: 0 | comments:0

নিত্যানন্দ দাস বাবাজি বিষ খেয়েছেন, এই সংবাদ মুহূর্তেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ল সারা গ্ৰামে। সেদিন গ্ৰামের বারোয়ারী রাধাগোবিন্দ মন্দিরে বাৎসরিক কীর্তনের আসর চলছিল। এই সময় প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই গ্ৰামে আসে হরিনাম উৎসবকে কেন্দ্র করে। প্রতি বাড়িতে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের ভীড় বাড়ে। গোঁসাই বাবাজির বাড়িতেও প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়েছে। আগের দিন গেছে ভীম একাদশী। ধর্মপ্রাণ মানুষ ও ভক্তিমতি মহিলারা সকাল থেকে নিত্যানন্দ দাসের মন্দিরে চাল আলু ফল টাকা পয়সা দিয়ে যাচ্ছিল একাদশীর পুণ্য পাওয়ার আশায়। দান সামলাতে মন্দিরে দুজন ভক্ত হিমসিম খাচ্ছে। বেশিরভাগ ভক্ত বাবাজির হাতে দান দিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে চায়। কারণ তারা বাবাজির মুখে শুনেছে, শুদ্ধ ও ঈশ্বরপ্রাপ্ত মহাজনের হাতে একাদশীর দান না দিলে উপবাসের ফল মেলে না।

        মাঘের মাঝামাঝি সময় শীতটা প্রায় ছেড়ে গিয়ে আবার এই কদিন বেশ জাঁকিয়ে পড়েছে। নাটমন্দিরের বারান্দায় সকালের রোদ এসে চিকচিক করছে, রোদটা বেশ আরামদায়ক। পুণ্যকামি মায়েরা ভোর ভোর সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম সেরে স্নান করে মন্দিরে এসেছে।তারা ভিজে চুল পিঠে ছাড়িয়ে দিয়ে সকালের রোদ উপভোগ করে। মন্দিরে তখন সদ্য ঠাকুরের বাল্যভোগ দেওয়ার পালা শেষ হয়েছে। উত্তরে হাওয়ায় মন্দিরের ভিতর থেকে ভেসে আসছে অগুরু চুয়া চন্দনের মিষ্টি সুগন্ধ। পাকশালায় চলছে ঠাকুরের মধ্যাহ্ন ভোগের আয়োজন,তরিতরকারির ভিন্ন স্বাদের কিছু গন্ধ ধূপ ধূনার গন্ধের সঙ্গে একাকার হয়ে অসাধারণ এক অনুভূতি তৈরি করছে।


বেলা বাড়ার সাথে সাথেই মন্দির প্রাঙ্গণে সাধু বৈষ্ণবের ভীড় বাড়তে থাকে। সহকারী ভক্তেরা মন্দিরে মধ্যাহ্ন ভোগ উঠিয়ে দেয়। বাবাজি নিত্যানন্দ দাস ভগবানের ভোগ লাগিয়ে শুরু করেন ভোগ আরতি কীর্তন,

ভজ ভকত বৎসল শ্রীগৌর হরি।

শ্রীগৌর হরি জয় গোষ্ঠ বিহারী।।

বেলা হল দামোদর আইস এখন।

ভোগ মন্দিরে বসি করহ ভোজন।।.......

মন্দিরের ভিতরে বিগ্ৰহের সামনে সাজানো হয়েছে সুগদ্ধি চালের অন্ন, ষোড়শ ব্যাঞ্জন, দধি দুগ্ধ ঘৃত শর পুলি মোণ্ডা মিঠাই ক্ষীর নবনী। এইসব খাবার দেবতার খাওয়ার জন্য ভক্তরা কাঁসা করতাল মৃদঙ্গ বাজিয়ে কাতর আহ্বান করছে।


 গ্ৰামের কিছু বয়স্ক পুরুষ মহিলা যারা বৈষ্ণব নয়, ভিক্ষা করে খায়। তারা এসেছে সুখাদ্য খাবারের আশায়। দেরিতে আসায় বাল্যভোগের খিচুড়ি তারা খেতে পায়নি। সাধুরা বলেছে অপেক্ষা করতে, ভগবানের সেবার পরে সাধু বৈষ্ণব প্রাসাদ পাবে। তারপরে তাদের খাবার মিলবে। তাদের ক্ষুধার্ত শরীরে যেন আর তর সইছে না। সাধুদের নাচানাচি ও দীর্ঘ কীর্তনে তারা অনেকটা অধৈর্য হয়ে ওঠে। গান বাজনা শেষ হয়ে মন্দিরের দরজা খোলা দেখার জন্য তারা ভিতরে বড় ব্যাকুল হয়ে ওঠে।


কীর্তন শেষে মন্দিরের দরজা খুলতে ভক্তরা হুমড়ি খেয়ে পড়ল ভগবানের ভোগ দর্শন করতে। নিত্যানন্দ দাস ঠাকুরের মুখ প্রক্ষালন করিয়ে শয়নের ব্যবস্থা করে, ভক্তদের সেবার আয়োজনে মনোনিবেশ করলেন। সারা জীবনের নিয়ম অনুযায়ী সকলকে খাইয়ে তিনি নিজে খেয়ে মন্দিরের বারান্দায় বিশ্রাম নিতে গেলেন।বয়সের ভারে জীর্ণ নিত্যানন্দের শারীরিক নানা সমস্যার সঙ্গে কাশিটা কয়েকদিন বেশ চেপে ধরেছে। এখন খাওয়া দাওয়ার পরে কাশি বাড়ায় একজন ভক্তকে বললেন ঠাকুর মন্দিরের সেল্ফ থেকে তাঁর কাশির সিরাপটা এনে দিতে। গুরু আঙ্গায় ভক্ত সিরাপের বোতল এনে বাবাজির হাতে দিতে,কাশি আটকাতে বাবাজি বোতল খুলে তাড়াতাড়ি এক ছিপি সিরাপ নিয়ে নিজের মুখে ঢেলে দিলেন। কণ্ঠে যেতে নিত্যানন্দ বুঝতে পারলেন সিরাপের বদলে তিনি হামলা বিষ খেয়ে ফেলেছেন। কয়েকদিন আগে বাগানে দেওয়ার জন্য পুরানো সিরাপের বোতলে করে বাবাজি নিজে পাড়ার ঘোষেদের দোকান থেকে বিষ এনে রেখেছিলেন।একই সেল্ফে বিষ ও সিরাপের শিশি পাশাপাশি রাখায় এই বিপত্তি।


ভূরিভোজ খাওয়ার পরে বৈষ্ণবী মায়েরা একটু শরীর এলিয়ে দিয়ে ঘর সংসারের সুখ দুঃখের গল্প শুরু করেছিল। হটাৎ নাটমন্দিরের বারান্দায় চীৎকার চেঁচামেচিতে সবাই সেখানে ছুটে এলো।বৃদ্ধ নিত্যানন্দ দাসকে ঘিরে রয়েছে তাঁর শিষ্য ও ভক্তরা। বাবাজি ওকার তুলছেন। তীব্র বিষের ঝাঁঝালো গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে।

          খবর শুনে পাড়া প্রতিবেশীরাও ছুটে এসেছে। প্রতিকারের জন্য এক একজন এক এক রকম পরামর্শ দিচ্ছে। একজন তো বাবাজির গাল হাঁ করিয়ে কিছুটা সরষের তেল গালে ঢেলে দিল।আর একজন দুটো মুরগির ডিম এনেছে ভেঙে বাবাজি কে গিলিয়ে  দেওয়ার জন্য। ভক্তরা চীৎকার করছে, যা করো তা করো বাপু, বাবার মুখে কিন্তু ডিম ঢালবে না কেউ। পাগলের মত ভীড় ঠেলে এক বৈষ্ণবী মা মন্দির থেকে ভগবানের পা ধোওয়া পাদদক এনে বাবাজির গালে ঢেলে দিলো। কেউ প্রসাদী ফুল এনে মাথায় বুকে ছুঁইয়ে দিলো। সহসা কার নেতৃত্বে বেজে উঠল  

খোল করতাল শাঁখ কাঁসার আওয়াজ।কী হচ্ছে ঠিকঠাক কিছু বোঝা যাচ্ছেনা। ভীড়ের মাঝখানে বাবাজি মাটিতে পড়ে গোড় খাচ্ছে, ভক্তরা ধেই ধেই করে নাচছে আর ভগবানের কাছে কাঁদছে তাদের গুরুর প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।


বাবাজির ছোটো ভাই বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী মানুষ। ভীড় থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে সাধু সন্তদের কান্ডকারখানা দেখছিল কিছুটা অসহায়ের মত। কারণ সে জানে এখন সাধু বৈষ্ণবদের কাছ থেকে তার দাদাকে ছাড়িয়ে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যেতে পারবে না সে। ধর্মবিশ্বাসী মানুষেরা যুক্তি ও বাস্তব সত্য কে মানতে চায় না। কিছুদিন আগের ঘটনা, সেদিন মন্দিরে কি একটা উৎসব উপলক্ষে বহু মানুষের সমাগম হয়েছিল। অন্য সব অনুষ্ঠানের মতো  সবজি কাটা ও রান্নার সহযোগিতা করার জন্য বাবাজি দুই বৌমাকে ডেকেছিলেন। ছোটো বৌমা স্নান করে নতুন শাড়ি পরে সবজি কাটতে গিয়েছিল। সহসা এক বৈষ্ণব ছোটো বৌমার দিকে তাকিয়ে তাকে সবজি কাটতে নিষেধ করলেন। ছোটো বৌ কারণ জিজ্ঞাসা করতে সাধুবাবা বললেন, - মা, তোমার গলায় কণ্ঠি নেই,অঙ্গে তিলক নেই। তোমার শরীর তো অশুদ্ধ মা, তোমার ছোঁয়া ঈশ্বর গ্ৰহণ করবেন না, এমনকি বৈষ্ণব সমাজ ও নয়।

         বাধা পেয়ে ছোটো বৌ মনখারাপ করে ঘরে ফিরতে ছোটো বাবু জিজ্ঞাসা করল, - কী ব্যাপার? হাসিমুখে গেলে আর আর আষাঢ়ে মেঘের মতো মুখ কালো করে ফিরে এলে যে? সব শুনে ছোটো বাবু আর স্থির থাকতে পারল না। এমনিতে সে এসব ব্যাপারে নিজেকে জড়াতে চায় না। বাইরে কাজে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে কি ভেবে বলল, - চলত দেখি।

ঝামেলা এড়াতে ছোটো বৌ বলল, - না না ছাড়ো ওসব, তুমি কাজে যাচ্ছ তাও, ওখানে যাওয়ার কোনো দরকার নেই।ছোটো বাবু স্ত্রীর কথা না শুনে তাকে নিয়ে রান্নাঘরে হাজির।সাধুবাবা ছোটো বাবুর পূর্বপরিচিত।ছোটো বাবুর জিজ্ঞাসায় হাত জড় করে বলল, - মায়ের এখনও গুরুদীক্ষা হয়নি।তিলক মালা নেই কিনা তাই....

- মানে আপনাদের বিচারে উঁনি অপবিত্র, উঁনার ছোঁয়ায় আপনাদের জাত যাবে এমনকি আপনাদের ভগবানেরও।

সাধু বিনয় করে বলল, - আপনি জ্ঞানী মানুষ, সবই তো বোঝেন। আচার বিচার তো ফেলে দেওয়া যায় না।

ছোটো বাবু বলল, - বেশ বেশ, তাহলে আচার বিচার,সূচি শুদ্ধতা আপনারা সব মেনে চলেন তো?

- বৈষ্ণব মানুষ,এসব না মানলে কী ধর্ম রক্ষা হয়?

- বেশ, তাহলে এই যে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস নিয়ে ভগবানের ভোগ রান্না করছেন।এই সিলিন্ডার কালকের কোনো মুসলমানের বাড়িতে ছিল, সেখানে গোস্তো রান্না হয়েছে। অথবা কোনো হোটেল রেস্তোরাঁয় মাছ মাংস রান্না হয়েছে, সেই সিলিন্ডারে ঠাকুরের রান্না করছেন কীভাবে?

       ছোটো বাবুর এমন প্রশ্নে সাধুবাবা কিছুটা খেই হারিয়ে ফেললেন, তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, - এসব কী আর পবিত্র না করে রান্নাঘরে তুলেছি?

- মানে? কীরকম পবিত্র?

- গঙ্গাজলে ধৌত করে তবে বাইরের জিনিস ভিতরে নেওয়া হয়।

- মানে গঙ্গাজলে পবিত্র, তাইত?

- একদম ঠিক, গঙ্গা মা হলেন পতিতপাবনী। জগতের যত অপবিত্র তা পবিত্র করার শক্তি একমাত্র তাঁরই আছে।

- তাহলে সাধুবাবা, যে গঙ্গাজলে লোহার জড় বস্তু পবিত্র হয়ে যেতে পারে, সেই গঙ্গাজলে একটা রক্ত মাংসের সচল মানুষ কেন পবিত্র হতে পারল না?

- মানে? আপনার কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না।

 - মানে গঙ্গাজল ছিটিয়ে যদি মাছ মাংস রান্নার সিলিন্ডার পবিত্র করা যায়, তাহলে সেই জল ছিটিয়ে এই অপবিত্র মানুষটির পবিত্র করে নিয়ে কাজ চালাতে পারতেন। তাহলে আপনার আচরণে এই মানুষটি মনে দুঃখ পেত না।

এইসব ভাবনার মাঝে প্রবল কান্নার আওয়াজ কানে এল ছোটো বাবুর। ভাবনার জগত থেকে সম্বিত ফিরে দেখতে পেল তার বড় বৌদি মড়া কান্না শুরু করে দিয়েছে।মানে অবস্থা ক্রমশ বেগতিক হয়ে উঠেছে।একপলক কি যেন ভাবল ছোটো বাবু। তারপর প্রবল বিক্রমে ভীড় ঠেলে ভিতরে গিয়ে,রুগিকে ঘিরে বেষ্টনী করে গীতা পাঠ করতে থাকা মানুষগুলোকে সরিয়ে, নিত্যানন্দ দাস বাবাজি কে কোলে করে চাগিয়ে বাইরে বের করে আনল।


পাশের গ্ৰামে একজন গ্ৰামীন চিকিৎসক আছেন। সবাই বলে বিষ খাওয়া রুগির চিকিৎসায় সে নাকি একেবারে ধ্বনন্তরি। নিত্যানন্দ বাবাজি কে সেখানে নিয়ে যাওয়া হল।ডাক্তারের নির্দেশমতো প্রথমে রুগিকে এক দু-বালতি পটাস জল গেলাতে হবে। এদিকে রুগি প্রায় নিস্তেজ হয়ে এসেছে। সেই অবস্থায় প্লাষ্টিকের মগে করে মুখের কাছে জল নিয়ে যেতে বাবাজি হাত দিয়ে জল সরিয়ে দিতে চাইলেন। বোঝা গেল চিরদিনের বিশ্বাস অনুযায়ী অবৈষ্ণবের বাড়ির অপবিত্র পাত্রের জল তিনি মুখে নিতে পারবেন না।

         আসলে ডাক্তার গ্ৰামীন জীবনযাপন করেন। বাড়িতে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল আছে। নিত্যানন্দ বাবাজি প্রভাতী নগরকীর্তনে বেরিয়ে অনেক বাড়িতে নাম বিতরণ করলেও এইসব বাড়ির ত্রীসিমানায় আসতেন না।আজ কিনা সেই নরকে তাঁকে আসতে হলো! বাবাজির মতি বুঝে একজন বৈষ্ণবী মা ছুটে গিয়ে কয়েকটা তুলসীপাতা এনে জলে ফেলে বলল, - এবার খাও বাবা, জলে তুলসী দিয়েছি। এইসব কাণ্ড দেখে ডাক্তার কার্যত বিরক্ত হয়ে বলল, - এসব এখানে চলবে না, এখানে বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা করা হবে।এটা বুজরুকির জায়গা নয়।

ডাক্তারের রসহীন খটখটে কথায় একজন বৈষ্ণব আহত হয়ে বলল, - বিজ্ঞানের কী ক্ষমতা আছে ডাক্তারবাবু যা নিয়ে আপনি এমন বড়াই করছেন? জগত সংসার সব তো তাঁর হাতে। রাখে হরি মারে কে?

- তাহলে এখানে কেন? হরির কাছে নিয়ে যান।

- হরি তো আপনার কাছে পাঠালো। আপনি তো শুধু উপলক্ষ মাত্র,যা করার আমার হরিই তো করবেন।

ডাক্তার এমনিতেই খুব স্পষ্টভাষী। গুলতাপ্পি দেওয়া জলমেশানো কথাবার্তা তার একদম পছন্দ নয়।বাবাজির কথার কিছু কড়া উত্তর দেওয়ার উপক্রম করতে,অন্য সাধু ডাক্তারের হাত ধরে বলে, - এখন বাকবিতন্ডার সময় নয় ডাক্তারবাবু। অনুগ্ৰহ করে আপনি চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।


দিনরাত এক করে দিয়ে ডাক্তার আর ডাক্তারের ছেলে বাবাজি কে নিয়ে লড়াই করছে।বাবাজির অনুগামিরা দলে দলে আসছে। কিন্তু ডাক্তারের বাড়িতে কারো প্রবেশ নিষেধ। ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছে আটচল্লিশ ঘন্টা পার না হওয়া পর্যন্ত ঠিকঠাক কিছু বলা যাবে না। সময় পেরোতে যখন ডাক্তারের বাড়ির দরজা সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলো, তখন অনেকেই দেখল ডাক্তারকে যেন আর চেনাই যাচ্ছে না।চোখ দুটো জবা ফুলের মতো লাল হয়ে গেছে। মাথার চুল উসকোখুসকো, মুখ চেহারা সব ভীষণ রকমের শুষ্ক। তাহলে কি বাবাজি.......

        বাবাজি প্রসন্নচিত্তে ঘুমিয়ে আছে। বাবাজি কে দেখে ভক্তরা হরিধ্বনিতে উল্লাস করে উঠলো। খবর পেয়ে চারদিক থেকে পিলপিল করে সাধু বৈষ্ণব ও ভক্তরা আসতে লাগল। কয়েকজন কয়েকঘড়া গঙ্গাজল ও বাবাজির জন্য নতুন বস্ত্র নিয়ে হাজির। বাবা কদিন একেবারে নরককুণ্ডে পড়ে ছিলেন। গঙ্গাস্নানে বাবার দেহ ধৌত করে নব্য বস্ত্র পরিধান করিয়ে মন্দিরে ফেরৎ নিয়ে যেতে হবে। রাধারানী করুনা করে তাদের প্রিয় মানুষটির প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে। ভক্তের প্রতি ভগবানের কি পরীক্ষা!

আওয়াজ উঠলো রাধারানীজী কি? ভক্তরা বলল,- জয়।


নিত্যানন্দ বাবাজি কে স্নান করিয়ে পোষাক পরিয়ে, কপালে ও সারা শরীরে তিলক অঙ্কিত করে, গলায় ফুলের মালা পরিয়ে, নরকে কলুষিত বাবাজির পোশাক নরকে নামিয়ে রেখে, দেবতার মহিমায় মৃত্যুঞ্জয়ী নিত্যানন্দ বাবাজি কে বৈষ্ণবেরা স্বর্গ যাত্রায় নিয়ে গেলো প্রবল কলরব করতে করতে।

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86933